শ্রেণিকক্ষ, আবাসন, পরিবহন, ডাইনিংসহ নানা সংকটের বেড়াজালে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)। প্রতিষ্ঠার ১০ বছরে শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য নির্মিত হয়েছে মাত্র দুটি হল। ছাত্রী হলের একেকটি গণরুমে ৩৭ জন গাদাগাদি করে থাকেন। পড়াশোনার পরিবেশ তো নেই-ই, শিক্ষার্থীদের দিনও কাটে মানবেতরভাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ৫ জুন পাবনা শহরের অদূরে রাজাপুরে দেশের ৩১তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি যাত্রা শুরু করে। ওই বছরই ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষে চার বিভাগের সম্মান শ্রেণিতে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী ভর্তি হন। পরে ৩০ একর জামির উপর নির্মিত হয় নতুন ক্যাম্পাস। বর্তমানে পাবিপ্রবিতে পাঁচ অনুষদের আওতায় ২১ বিষয়ে পড়াশোনা করছেন প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, আড়াই বছর আগে দুটি হলে শিক্ষার্থী থাকা শুরু করলেও ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছেলেদের জন্য ৪৫০ এবং শেখ হাসিনা হলে মেয়েদের জন্য ২৫০টি সিট বরাদ্দ রয়েছে। ডাইনিংয়ে খাবার নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। প্রায়ই বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে ঢেকে যায় ক্যাম্পাস। বিদ্যুৎ সমস্যার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি। শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ হুমায়রা আঞ্জুম বলেন, ‘হলে নিরাপত্তাজনিত ঝামেলার কিছুটা অবসান হয়েছে। সম্প্রতি চারজন নারী আনসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ ডাইনিং বন্ধের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, শিগগিরিই এটি চালু করা হবে। পরিবহন প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব চারটি ও ভাড়া করা আরও তিনটি বাস শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ব্যবহার হয়। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে একটি মিনিবাস। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রয়োজনের তুলনায় সাতটি বাস কিছুই নয়। গাদাগাদি করে বাসে চলাচল করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে জায়গা না হওয়ায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন গণপরিবহনে। এ ছাড়া গ্রন্থাগার, গবেষণাগারসহ অন্য সুযোগ-সুবিধাও কম। শিক্ষার্থী ইশরাত ও জুঁই বলেন, ‘২১টি বিভাগের জন্য রয়েছে মাত্র ২১টি শ্রেণিকক্ষ। এ জন্য এক বর্ষের ক্লাসের সময় অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।’ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আওয়াল কবির জয় বলেন, ‘আমাদেরও মাঝেমধ্যে ক্লাস নিতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটুকু কষ্ট করতে হবে।’ উপাচার্য ড. রুস্তম আলী বলেন, আশা করছি খুব শিগগিরই সমস্যাগুলোর সমাধান হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। সেটি অনুমোদন পেলে আবাসন, শ্রেণিকক্ষ সমস্যা থাকবে না।
- প্রচ্ছদ
- »
- বিশেষ সংবাদ
- »
- যেখানে শিক্ষার্থীদের মানবেতর জীবন